ভূমিকা। নারীদের জীবন গড়ার পাথেয়

 

কিতাবের ভূমিকা। নারীদের জীবন গড়ার পাথেয়

💮 অনুবাদকের কথা

নারীদের জীবন কিছুটা বিচিত্রময়। কন‍্যা হয়ে পৃথিবীতে আসলেও সময়ের সাথে সাথে তার জীবনে বিভিন্ন পরিবর্তন আসতে থাকে। অনেকগুলো ধাপ জীবনে পারি দিতে হয় তাকে। স‍ে শুধু কন‍্যাই থাকে না, এক সময় কারো স্ত্রী হয়। কয়েক বছরের ব‍্যবধানে মা, এক সময় শাশুড়ি! প্রতিটি অধ‍্যায় তার জন্য নিয়ে আসে নতুন কিছু। সেটা কখনো হয় সুখের, কখনো হয় দুঃখের। এই সুখ-দুঃখের কারণ হয়ত সে নিজেই। তার বিজ্ঞতা আর অজ্ঞতাই এর জন্য দায়ী। জীবনের সবচে’ কাঠিন ও জটিল অধ্যায়ে সে প্রবেশ করে, কিছু না জেনে, কিছু না শিখে, একেবারে অপ্রস্তুত অবস্থায়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কী কী সমস্যা হতে পারে, সেগুলোর সমাধান কী? এসব নিয়ে না সে নিজে ভাবে, না তার অভিভাবকরা ভাবে। ফলে সমস্যায় পড়তে হয় পদে পদে। কখনো সংসার ভেঙ্গে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটে। কিংবা সংসার হয়ত টিকে আছে, কিন্তু শান্তি নেই। স্বাভাবিক শান্তি হয়ত বজায় আছে, কিন্তু বিবাহ যে দুনিয়ার বুকে মানবজাতির জন্য আল্লাহর দেয়া এক জান্নাতি নেয়ামত, সে খবর সে পায়নি। শুধু অজ্ঞতার কারণে, শিক্ষার অভাবে। মা-বাবা সন্তানকে কত বিষয়ে কত উপদেশ দিয়ে থাকেন। উস্তাদ কত কিছু নছীহত করেন, কিন্তু জীবনের সবচে’ কঠিন ও জটিল বিষয়টি কেন যেন তারা এড়িয়ে যান।


হযরত মাওলানা জুলফিকার নকশবন্দী দা.বা. পারিবারিক জীবন নিয়ে অনেক বই লিখেছেন। সেগুলোর মধ্যে হযরতের এই বইটি আমার কাছে মনে হয়েছে অনন্য। কারণ, বইটির মধ্যে হযরতজী বিশেষভাবে নারী জীবনের আদ্যোপান্ত বিশদভাবে তুলে ধরেছেন।

একজন নারী তার জীবনের যতগুলো অধ‍্যায় পার করে থাকে প্রতিটি অধ‍্যায়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কী কী সমস্যার সে পড়তে পারে এবং তার সমাধান কী? সমসাময়িক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ইসলামের আলোকে সেগুলো সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। 


পুরো বই আমি কয়েকবার পড়েছি। পড়ার পর মনে হয়েছে, বইটি সবার জন্য উপকারী হবে, তাই অনুবাদে হাত দিয়েছি। অনুবাদের কাজ প্রায় শেষ। এখন বাকি শুধু ঘষামাজা। যে কাজ আমার জন্য অনুবাদ থেকেও কঠিন! তবে আল্লাহ তায়ালা তৌফিক দান করলে দুর্বল হাতেও সুন্দর কিছু হতে পারে।


💮 লেখকের কথা

বেশ কিছুদিন যাবত অধম এই চিন্তায় ছিলাম যে, এতেকাফে থাকাকালীন এবার মাসতুরাতের জন্য কোন বিষয় নির্বাচন করবো? এক সময় মনে হল, নারীদের জীবনে তো অনেকগুলো অধ‍্যায় রয়েছে। প্রতিটি অধ‍্যায় সে কিভাবে একজন আদর্শ নারী হতে পারে সেটা তাদের সামনে তুলে ধরবো। যেমন– আদর্শ মেয়ে কিভাবে হবে? আদর্শ শিক্ষার্থী কিভাবে হবে? আদর্শ স্ত্রী কিভাবে হবে? আদর্শ বধূ কিভাবে হবে? আদর্শ মা কিভাবে হবে? আদর্শ শাশুড়ি কিভাবে হবে? সর্বোপরি আল্লাহ্ তায়ালার একজন খাঁটি বান্দী কিভাবে হবে? অর্থাৎ ধাপে ধাপে যতগুলো অধ্যায় ও পর্ব একজন নারী তার জীবনে পার করতে থাকে, প্রতিটি ধাপে তাদেরকে দিক-নির্দেশনা দিবো। জীবনের সফলতা কোন পথে আর ব্যর্থতা কোন পথে? আলোচনা সংগ্রহের লক্ষ্যে বিভিন্ন মাকতাবায় কিতাব খোঁজ করেছি। আদর্শ বর-কনে নামে কয়েকটি কিতাব পেয়েছি। সেগুলো অধ্যয়ন করার পর -তথ্য-উপাত্তের দৈন্যতা আর বিষয়বস্তুর স্বল্পতা দেখে- মনে হলো, ‘শুধু এগুলো পড়ে জীবনের প্রতিটি অঙ্গনে সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ পাথেয় সংগ্রহ করা সম্ভব নয়’।


উল্লিখিত শিরোনামের উপর আলোচনা সংগ্রহ করতে যথেষ্ট মেহনত করতে হয়েছে। আলোচ‍্য বিষয়গুলো প্রথমে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করেছি। এরপর সমসাময়িক বৈজ্ঞানিক সর্বশেষ গবেষণা যুক্ত করেছি। 

যেখানে বলেছি ‘গবেষণা দ্বারাও বিষয়টি প্রমাণিত’। সেখানে উদ্দেশ্য হল, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া অথবা নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি কিংবা পেনসিলভ্যানিয়া।

কিতাবটি গুরুত্বের সাথে পাঠ করলে আশা করি মা-বোনদের খুব উপকার হবে, ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা সবাইকে কবুল করুন। আমীন।

আলোচনার একপর্যায়ে মনে হলো, পুরুষদের উদ্দেশ্যেও কিছু আলোচনা করি। যাতে কিতাবটি নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের জন্যও উপকারী হয়। তাই তাদের উদ্দেশ্যেও কিছু আলোচনা যুক্ত করা হয়েছে। মা-বোনদের কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনারা স্বীয় যুবক ছেলে, স্বামী, ভাই ও আপনজনদেরকে কিতাবটি পড়তে উদ্বুদ্ধ করবেন।

Post a Comment

0 Comments